দৈনন্দিন ইসলামী প্রশ্ন-উত্তর

সমাধান : ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার বাংলাদেশ, বসুন্ধরা, ঢাকা

স্বামীর ভাত না খাওয়ার কসম করলে

প্রশ্ন : এক নারী তার স্বামীর ওপর অভিমান করে কসম করেছে, ‘আল্লাহর কসম, আমি তোমার ভাত খাব না। ’ কিন্তু পরে তাদের মধ্যে বনিবনা হয়ে যায়। এখন ওই নারীর কসমের কী হবে? ওই স্ত্রীর করণীয় কী?

বদরুল হায়দার, ফার্মগেট

উত্তর : স্ত্রী কর্তৃক ‘আল্লাহর কসম, আমি তোমার ভাত খাব না’ বলার দ্বারা কসম সংঘটিত হয়েছে। ঘর-সংসার করতে হলে যেহেতু স্বামীর ভাত খেতে হবে।

তাই ভাত খেয়ে কসম ভেঙে এর কাফফারা আদায় করে নেবে। কসমের কাফফারা হলো, ১০ জন গরিবকে দুই বেলা পেট ভরে খাবার খাওয়ানো অথবা এক জোড়া করে পরিধানের কাপড় দেওয়া। এই দুটির সামর্থ্য না থাকলে তিন দিন রোজা রাখবে। (সুরা : মায়েদা : ৮৯, হিন্দিয়া : ২/৫৮, কেফায়াতুল মুফতি : ২/২৪২)

কোনো কম্পানি পণ্যে লটারি ঘোষণা করলে

প্রশ্ন : বিভিন্ন কম্পানি তাদের বিক্রয় বাড়ানোর জন্য লটারির ঘোষণা দেয়। যেমন—মোবাইল ফোন কিনলে যেকোনো একজন বিজয়ী পাবেন মোটরসাইকেল। প্রশ্ন হলো, ওই মোবাইল ক্রয় করার পর কম্পানির পক্ষ থেকে লটারির মাধ্যমে কেউ মোটরসাইকেল পেলে তা গ্রহণ করা কি জায়েজ?

জাকারিয়া, খুলনা

উত্তর : বৈধ পণ্য নিজ প্রয়োজনে ক্রয় করা হলে মালিকপক্ষ যদি লটারির মাধ্যমে পুরস্কার ঘোষণা করে তাহলে তা গ্রহণ করা ইসলামপরিপন্থী নয়। পক্ষান্তরে পুরস্কার পাওয়ার আশায় পণ্য ক্রয় করা জুয়ার নামান্তর। এমতাবস্থায় ঘোষিত পুরস্কার গ্রহণ করা জায়েজ নয়। অতএব কেউ ব্যক্তিগত প্রয়োজনে মোবাইল কেনার পর কাকতালীয়ভাবে মোটরসাইকেল পেলে তা নিতে সমস্যা নেই, তবে কেউ যদি মোটরসাইকেল পাওয়ার আশায় মোবাইল কেনে তবে তা জুয়ার নামান্তর হবে। (হেদায়া : ৩/৫৯, ফাতাওয়ায়ে ফকীহুল মিল্লাত : ১০/১৬৭)

স্বামী পাগল হয়ে গেলে বিবাহবিচ্ছেদের পদ্ধতি

প্রশ্ন : আমার খালাতো বোনের বিয়ের পাঁচ বছর পর স্বামী পাগল হয়ে যান। তাঁদের একটি পুত্রসন্তান আছে। এরপর পাঁচ বছর অতিবাহিত হয়ে গেলেও স্বামীর সুস্থ হওয়ার কোনো লক্ষণ নেই। স্বামীর চিকিৎসায় ওই নারী ব্যক্তিগত সব সম্পদ ব্যয় করে ফেলেছেন। কিন্তু কিছুতেই তাঁকে সুস্থ করা যাচ্ছে না। এখন ওই নারীকে ইসলামের নিয়ম মেনে অন্যত্র বিয়ে দেওয়ার কোনো সুযোগ আছে কি?

ইসহাক, ময়মনসিংহ

উত্তর : বিয়ের পর স্বামী পাগল হয়ে যাওয়ায় স্বামী-স্ত্রীর জীবনযাপন যদি অসহনীয় হয় এবং স্ত্রী বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করতে বাধ্য হয়, তাহলে কাবিননামার তাফবিজে তালাকের ক্ষমতাবলে তালাক নিতে পারবে। আর যদি তাফবিজের মাধ্যমে তালাক নেওয়ার ক্ষমতাপ্রাপ্ত না হয়ে থাকে, তাহলে ইসলামী পদ্ধতিতে পরিচালিত আদালত কিংবা দ্বিনদার, পরহেজগার অভিজ্ঞ আলেমসংবলিত পঞ্চায়েতের মাধ্যমে তালাক গ্রহণের ব্যবস্থা নিতে হবে। অতঃপর ইদ্দত পালন শেষ হলে অন্যত্র বিয়ে দেওয়া যাবে। (আল মাবসুতুস সারাখসি : ৯/৯৭, আল-বাহরুর রায়েক : ২/১২৬, আল হিলাতুন নাজিজাহ : ৯৯)

সংগ্রহ ঃhttps://www.kalerkantho.com/print-edition/islamic-life/2022/05/23/1148637

Leave a comment

Design a site like this with WordPress.com
Get started