আল্লাহই অস্তিত্ব দান ও পুনরুত্থানের মালিক

মুফতি আতাউর রহমান   

মহান আল্লাহর দুটি গুণবাচক নাম হলো ‘মুবদিয়ু’ ও ‘মুয়িদু’। ‘মুবদিয়ু’ হলেন যিনি অস্তিত্বহীন অবস্থা থেকে কোনো কিছুকে অস্তিত্ব দান করেন। আর ‘মুয়িদু’ হলেন যিনি কোনো অস্তিত্ববান বিষয় অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলার পর তাকে পুনরায় অস্তিত্বে নিয়ে আসেন। আল্লামা আবু মানসুর আজহারি (রহ.) বলেন, ‘আল-মুবদিয়ু ও আল-মুয়িদু আল্লাহর গুণাবলির অন্তর্ভুক্ত।

আল্লাহ সৃষ্টিজগেক প্রথমে জীবন দান করেছেন। অতঃপর তাদের মৃত্যু দেবেন। এরপর আবার জীবন দান করবেন। ’ (তাহজিবুল লুগাহ : ৩/৮২)

পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘সৃষ্টিকে তিনিই প্রথম অস্তিত্বে আনেন, অতঃপর তার পুনরাবর্তন ঘটান। (সুরা : ইউনুস, আয়াত : ৪)

অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ আদিতে সৃষ্টির সূচনা করেন, অতঃপর তিনি এর পুনরাবৃত্তি করবেন। তারপর তোমরা তাঁর কাছে প্রত্যানীত হবে। ’ (সুরা : রোম, আয়াত : ১১)

আল্লামা ইবনে জারির তাবারি (রহ.) উল্লিখিত আয়াতের অর্থ এভাবে করেন, ‘নিশ্চয়ই তোমাদের প্রতিপালক সৃষ্টিজগেক অনস্তিত্ব থেকে অস্তিত্বে আনা ও সৃষ্টির সূচনা করেছেন। অতঃপর তার পুনরাবর্তন করবেন। ফলে সৃষ্টিজগৎ অস্তিত্বহীন হওয়ার পর পুনরায় সেই অবস্থায় ফিরে যাবে, যেভাবে তাকে প্রথম দিন সৃষ্টি করা হয়েছিল। হাদিসে কুদসিতে এসেছে, আল্লাহ তাআলা বলেন, আদম সন্তান আমাকে অস্বীকার করে অথচ তার জন্য উচিত ছিল না আমাকে অস্বীকার করা। আদম সন্তান আমাকে গালি দেয় অথচ তার জন্য উচিত ছিল না আমাকে গালি দেওয়া। আমাকে তার অস্বীকার করার অর্থ হলো তার এই কথা বলা যে, আমি তাকে পুনরায় সৃষ্টি করব না যেরূপ প্রথমে সৃষ্টি করেছিলাম অথচ দ্বিতীয়বার সৃষ্টি করা প্রথমবার সৃষ্টি করা অপেক্ষা আমার জন্য কোনো কঠিন বিষয় নয়। (সুনানে নাসায়ি,   হাদিস : ২০৭৮)

আল্লাহ অস্তিত্ব দান করেন এবং পুনরুত্থানের ক্ষমতা তাঁর হাতেই—এই কথার ওপর বিশ্বাস স্থাপন করা আবশ্যক। যারা আল্লাহর এই গুণাবলি অস্বীকার করে তাদের উদ্দেশে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা কিভাবে আল্লাহকে অস্বীকার করো? অথচ তোমরা ছিলে প্রাণহীন, তিনি তোমাদেরকে জীবন্ত করেছেন, আবার তোমাদের মৃত্যু ঘটান ও পুনরায় জীবন্ত করবেন। পরিণামে তাঁর দিকেই তোমাদেরকে ফিরিয়ে আনা হবে। ’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ২৮)

আল-মাউসুয়াতুল আকাদিয়া

Leave a comment

Design a site like this with WordPress.com
Get started